প্রাচীন রোমে মাশরুমের জনপ্রিয়তা এত ব্যাপক ছিল যে, একে বলা হতো
‘ঈশ্বরের খাবার’। ১৭০০ সালের শুরুর দিকে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুমের চাষ শুরু
হয়। খাদ্য ছাড়াও বিভিন্ন উল ও রং তৈরিতে এটি ব্যবহার হয়। সুস্বাদু,
পুষ্টিকর ও ঔষধি গুণসম্পন্ন খাবারের নাম মাশরুম। এর স্ট্যান্ডার্ড নাম
‘Agricus bisporus’ আমাদের দেশে খাদ্য হিসেবে এর প্রচলন খুব বেশিদিন না
হলেও বর্তমানে এর জনপ্রিয়তা অনেক। মুখরোচক খাদ্য হিসেবে এর প্রচলন শুরু হয়
প্রাচীন মিসরে। প্রায় তিন হাজারেরও বেশি সময় আগে মিসরের ফারাওদের কাছে এটি
ছিল জনপ্রিয় এক খাবার। তখন কেবল অভিজাতরাই এর স্বাদ গ্রহণ করতে পারত।
মাশরুম এক প্রকার সাদা সবজি। তবে খাদ্যগুণ বিবেচনায় এর অবস্থান সবজি ও
মাংসের মাঝামাঝি হওয়ায় এটিকে সবজিমাংস নামেও অভিহিত করা হয়। এটি ভিটামিন ও
প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার। কোনো ব্যক্তির দৈনিক যে পরিমাণ ভিটামিন গ্রহণ করা
প্রয়োজন তা মাশরুমে পর্যাপ্ত পরিমাণে আছে। ১০০ গ্রাম শুকনা মাশরুমে আছে ১৯
থেকে ৩৫ শতাংশ প্রোটিন। এছাড়া আছে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ফলিক
অ্যাসিড ও লৌহ। এতে চর্বি ও শর্করার পরিমাণ কম এবং আঁশ বেশি থাকায়
ডায়াবেটিক রোগীদের আদর্শ খাবার হিসেবে বিবেচিত হয়। কোলেস্টেরল কমানোর
অন্যতম উপাদান ইরিটাডেনিন, লোবাস্টাটিন ও এন্টাডেনিন থাকায় মাশরুম খাওয়া
উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগীদের জন্য ভালো। এছাড়া এটি ডেঙ্গুজ্বর ও
হেপাটাইসিস-বি জন্ডিসের প্রতিরোধক হিসেবে কাজ করে। গর্ভবতী মা ও শিশুর রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরিতেও মাশরুমের ভূমিকা অনন্য। মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে
ফলিক অ্যাসিড ও লৌহ থাকায় এটি রক্তশূন্যতা দূরীকরণেও কার্যকর। চীনে
বর্তমানে ১১ প্রজাতির মাশরুম বিভিন্ন রোগে সরাসরি ওষুধ হিসেবে ব্যবহার
হচ্ছে। আমাদের দেশেও মাশরুম গুটিবসন্ত, অ্যাজমা ও উচ্চ রক্তচাপজনিত
চিকিৎসায় ব্যবহার হচ্ছে। বর্তমানে আমাদের দেশে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ
ব্যাপকতা লাভ করেছে। অন্যান্য দেশের মতো বিভিন্ন প্রজাতির মাশরুম উৎপাদন
শুরু না হলেও ৮ প্রকার মাশরুম চাষ হচ্ছে।
বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষের কাছে মাশরুম একটি অপরিচিত সবজি। সঙ্গত
কারণেই এর রান্নার প্রক্রিয়াটি অনেকের কাছেই অজানা। ভালোভাবে রান্না করা
হলে এটি আমাদের মুখেও স্বাদ লাগবে। মাশরুম রান্নার কয়েকটি সংক্ষিপ্ত
প্রণালী হলো-
ক) মাশরুম সবজি
মাশরুম অন্যান্য দেশী সবজির সাথে মিশিয়ে রান্না করা যায়। এর জন্য যে পরিমাণে সবজি নিতে হবে-
|
|
|
|
|
|
ক্রমিক নং |
উপকরণ |
পরিমাণ |
|
|
১ |
শুকনো মাশরুম |
২০ গ্রাম |
|
|
২ |
আলু |
১টি (৫০ গ্রাম) |
|
|
৩ |
মটরশুটি |
১২০ গ্রাম |
|
|
৪ |
টমেটো |
১৫০ গ্রাম |
|
|
৫ |
পেঁয়াজ |
১০০ গ্রাম |
|
|
৬ |
আদা |
১০ গ্রাম |
|
|
৭ |
রসুন |
২ থেকে ৩ টি কোয়া |
|
|
৮ |
তেল |
১ থেকে ২ চামচ |
|
|
৯ |
অন্যমসলা, লবণ |
প্রয়োজনমত |
|
|
|
|
|
|
রান্না প্রণালী
• শুকনো মাশরুম গরম পানিতে ১৫ থেকে ২০ মিনিট ডুবিয়ে রাখতে হবে ;
• আলু, মটরশুটি, টমেটো ধুয়ে নিতে হবে। পেঁয়াজ, মটরশুটি ও আলুর খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে ;
• এরপর আলু, টমেটো ও পেঁয়াজ কুটতে হবে। পেঁয়াজ একটু তেলে ভেজে নিতে হবে ;
• আদা, রসুন বেটে নিতে হবে। মসলা তেলে ভেজে লবণ ও কাটা সবজি দিয়ে নাড়তে হবে ;
• এরপর একটু গরম পানি দিয়ে তরকারী সিদ্ধ করতে হবে ;
• মাশরুম টুকরা করে কেটে সিদ্ধ সবজির সাথে দিয়ে ২ থেকে ৩ মিনিট রান্না করে তুলে নিতে হবে।
খ) মাশরুম বিরিয়াণী
মাশরুমের স্বাদ কিছুটা মাংসের মত। এজন্য মাশরুমের সাথে সবজি মিশিয়ে
সহজেই সুস্বাদু বিরিয়াণী তৈরি করা যায়। মাশরুম বিরিয়াণী প্রস্তুত প্রণালী
হলো-
|
|
|
|
|
|
ক্রমিক নং |
উপকরণ |
পরিমাণ |
|
|
১ |
পোলাউর চাল |
১৫০ গ্রাম |
|
|
২ |
মাশরুম |
১০০ গ্রাম |
|
|
৩ |
গাজর |
৫০ গ্রাম |
|
|
৪ |
মটরশুটি |
৫০ গ্রাম |
|
|
৫ |
ফুলকপি |
৫০ গ্রাম |
|
|
৬ |
পেঁয়াজ |
১০০ গ্রাম |
|
|
৭ |
ধনেপাতা |
২৫ গ্রাম |
|
|
৮ |
রসুন |
৫ গ্রাম |
|
|
৯ |
আদা |
৫ গ্রাম |
|
|
১০ |
কাঁচা মরিচ |
৫ গ্রাম |
|
|
১১ |
টক দই |
৫০ গ্রাম |
|
|
১২ |
তেল/মাখন |
৫০ গ্রাম |
|
|
১৩ |
অন্যমসলা, লবণ, পানি |
প্রয়োজনমত |
|
|
|
|
|
|
রান্না প্রণালী
• চাল ভালোভাবে ধুয়ে নিতে হবে। মসলা বেটে নিতে হবে ;
• পেঁয়াজ সোনালী করে ভেজে রাখতে হবে ;
• মাশরুম পরিষ্কার পানিতে ধুয়ে কুচি কুচি করে কেটে ভেজে রাখতে হবে ;
• সবজি ধুয়ে কেটে সিদ্ধ করে নিতে হবে ;
• চাল তেলে ভেজে সামান্য পানি দিয়ে প্রায় রান্না করার অবস্হায় নিয়ে আনতে হবে ;
• দই ভাল করে ফেটে ধনে পাতা কুচির সাথে মিশিয়ে নিতে হবে ;
• এরপর সিদ্ধ সবজি, মাশরুম, দই মিশাতে হবে ;
• একটি পাত্রে আবার খানিকটা তেল/মাখন দিয়ে চুলায় দিতে হবে। এরপর সবজি,
মাশরুম পেঁয়াজ এর মিশ্রণ দিয়ে একটু নাড়তে হবে এবং প্রায় সিদ্ধ পোলাউর চাল
মিশিয়ে ১০ মিনিট হালকা আঁচে চুলায় রাখতে হবে ;
• তুলে পোলাউর উপর ভাজা পেঁয়াজ, কাজু বাদাম ইত্যাদি মিশিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
গ) মাশরুম ফ্রাই
নাস্তা হিসেবে মাশরুম ফ্রাই চা-এর সাথে পরিবেশন করা যায়। ইফতারীর সময়
বেসনের সাথে সবজি দিয়ে পাকুড়া তৈরির মত করে সবজির পরিবর্তে মাশরুমের পাকুড়া
তৈরি করা হলে তা যথেষ্ট সুস্বাদু হবে।
|
|
|
|
|
|
ক্রমিক নং |
উপকরণ |
পরিমাণ |
|
|
১ |
মাশরুম |
১০ থেকে ১২টি |
|
|
২ |
ডিম |
১ টি |
|
|
৩ |
বেসন |
১ থেকে ২ টেবিল চামচ |
|
|
৪ |
লবণ, গোল মরিচ গুড়া, সয়াবিন তেল |
পরিমাণ মত |
|
|
|
|
|
|
রান্না প্রণালী
• মাশরুম ধুয়ে পরিষ্কার করে পানি ছাড়িয়ে নিতে হবে ;
• একটি পাত্রে ডিম ভেঙ্গে বেসন, লবণ, গোল মরিচের গুড়া ভালোভাবে মিশিয়ে তাতে
প্রয়োজনমত পানি দিয়ে ঘন করে মিশ্রণ তৈরি করতে হবে। মাশরুমগুলো মিশ্রণে
ভালোভাবে ডুবিয়ে নিতে হবে ;
• পপাত্রে তেল গরম করতে হবে এবং একত্রে কয়েকটি মাশরুম ভেজে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
ঘ) মাশরুম হালিম
আমাদের দেশে বিভিন্ন ধরণের ডালের সাথে মাংস মিশিয়ে হালিম তৈরি করা হয়।
এক্ষেত্রে হালিমের জন্য প্রয়োজনীয় ডালের সাথে মাশরুম মিশিয়ে মাশরুমের হালিম
বানানো যায়। তাছাড়া পাতলা ডালের সাথে মাশরুম দিয়ে মাশরুম স্যুপও তৈরি করা
যেতে পারে।
|
|
|
|
|
|
ক্রমিক নং |
উপকরণ |
পরিমাণ |
|
|
১ |
মুগ ডাল |
১২৫ গ্রাম |
|
|
২ |
মসুর ডাল |
২৫০ গ্রাম |
|
|
৩ |
ছোলার ডাল |
১২৫ গ্রাম |
|
|
৪ |
মাশরুম তাজা |
৫০০ গ্রাম (শুকনো হলে ৫০ গ্রাম) |
|
|
৫ |
পেঁয়াজ কুঁচি, আদা, রসুন, জিরার গুড়া, হলুদের গুড়া, তেজপাতা, লবণ ও পানি |
পরিমাণ মত |
|
|
|
|
|
|
রান্না প্রণালী
• মাশরুম ধুয়ে পানি ছাড়িয়ে টুকরো করে কেটে রাখতে হবে ;
• ডালগুলো ধুয়ে পানিতে ছাড়িয়ে নিতে হবে ;
• মুগ ডাল সামান্য ভেজে ধুয়ে মসুর ও ছোলার ডালের সাথে মিশিয়ে ভালোভাবে
সিদ্ধ করে নিতে হবে। সিদ্ধ করার সময় ডালের সাথে আদা, রসুন, পেঁয়াজ কুঁচি ও
লবণ মিশিয়ে নিতে হবে। ডাল খুব ঘন করা যাবে না ;
• কাটা মাশরুম পেঁয়াজ কুচির সাথে ১ থেকে ২ মিনিট গরম তেলে হালকাভাবে ভেজে নিতে হবে। তারপর সিদ্ধ ডালের সাথে মিশিয়ে নিতে হবে ;
• সামান্য জিরার গুড়া এবং গোল মরিচের গুড়া মিশিয়ে গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
ঙ) চিকেন মাশরুম স্যুপ
আমাদের দেশের রেস্তেরাগুলোতে চিকেন কর্নস্যুপ অত্যন্ত জনপ্রিয়। চিকেন
কর্নের সাথে মাশরুম দিলে স্যুপের পুষ্টিমাণ বাড়বে এবং স্বাদও ভিন্নতর হবে।
চিকেন মাশরুম স্যুপ তৈরি করার জন্য নীচের উপরকরণগুলোর প্রয়োজন হবে।
|
|
|
|
|
|
ক্রমিক নং |
উপকরণ |
পরিমাণ |
|
|
১ |
মাশরুম |
২৫০ গ্রাম |
|
|
২ |
পেঁয়াজ |
২টি |
|
|
৩ |
মুরগীর স্টক |
৪ কাপ |
|
|
৪ |
পানি |
৩ কাপ |
|
|
৫ |
কর্নফ্লাওয়ার |
১ কাপ |
|
|
৬ |
বাটার অয়েল |
২০ গ্রাম |
|
|
৭ |
আদা |
২৫ গ্রাম |
|
|
৮ |
লবণ, টেস্টিং সল্ট |
পরিমাণ মত |
|
|
|
|
|
|
রান্না প্রণালী
• মুরগির স্টক তৈরি করার জন্য ৩০০ থেকে ৪০০ গ্রাম ওজনের একটি মুরগি ২.৫০
লিটার পানিতে পরিমাণ মত লবণ আদা দিয়ে ৩০ থেকে ৪৫ মিনিট সিদ্ধ করতে হবে।
মাংসগুলো নরম হয়ে আলাদা হয়ে গেলে ছাঁকনি দিয়ে ছেঁকে মুরগির হাড়গুলো আলাদা
করতে হবে এবং মাংস স্টক পানির সঙ্গে একত্রে মিশিয়ে নিতে হবে ;
• মাশরুম ও পেঁয়াজ চাকা করে কেটে নিতে হবে। তারপর বাটার অয়েল দিয়ে হালকাভাবে ভেজে নিতে হবে ;
• এবার এসব ভাজা মাশরুম, মুরগির হাড় ও মাংস সিদ্ধ স্টক পানিতে ৫ থেকে ১০
মিনিট ফুটিয়ে নিতে হবে। প্রয়োজন মত লবণ ও একটি কাপে অল্প পানিতে
কর্নফ্লাওয়ার গুলিয়ে নিতে হবে ;
• ২ থেকে ৩ মিনিট সিদ্ধ করতে হবে ;
• প্রয়োজন মত টেস্টিং সল্ট দিয়ে নামিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
চ) মাশরুম চিংড়ি
চিংড়ি মাছ এমনিতেই যথেষ্ট সুস্বাদু মাছ। এ মাছের সাথে মাশরুম রান্না
করলে একটু ভিন্ন স্বাদের তৈরি করা যায়। নীচে রান্নার উপকরণ ও প্রণালীর
বর্ণনা দেওয়া হলো-
|
|
|
|
|
|
ক্রমিক নং |
উপকরণ |
পরিমাণ |
|
|
১ |
মাশরুম |
৫০ গ্রাম |
|
|
২ |
মাঝারি ধরণের চিংড়ি |
২০০ গ্রাম |
|
|
৩ |
পেঁয়াজ , মরিচ, লবণ, আদা, হলুদ, সয়াবিন তেল |
পরিমাণ মত |
|
|
|
|
|
|
রান্না প্রণালী
• মাশরুম ধুয়ে কেটে পানি ছাড়িয়ে রাখতে হবে ;
• চিংড়ি মাছের খোসা ছাড়িয়ে নিতে হবে ;
• তেল, লবণ ও প্রয়োজনীয় মসলা দিয়ে মাছ তেলে ভেজে নিতে হবে ;
• মাছ প্রায় হলে আসলে মাশরুম চিংড়ি মাছের মধ্যে দিয়ে দিতে হবে ;
• ৫ থেকে ৭ মিনিট নেড়ে নামিয়ে নিতে হবে ;
• গরম গরম পরিবেশন করতে হবে।
ছ) মাশরুম স্যান্ডউইচ
স্যান্ডউইচ বর্তমানে শহরের মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয়। দ্রুত তৈরি এবং
সহজে বহন করার কারণে স্যান্ডউইচ সব বয়সের মানুষের কাছে পরিচিত। স্যান্ডউইচ
সাধারণত: মাংস, মাছ কিংবা ডিম দিয়ে হয়। মাছ, মাংস, ডিমের পরিবর্তে মাশরুম
ব্যবহার করা হলে স্যান্ডউইচ স্বাদ ও পুষ্টিমাণ ভিন্নরকমের হবে। যারা উচ্চ
রক্তচাপে ভোগেন তারা এই স্যান্ডউইচ খেতে পারেন এবং সেক্ষেত্রে বাটারের
পরিবর্তে কোলস্টেরল মুক্ত কর্ন অয়েল ব্যবহার করতে পারেন।
|
|
|
|
|
|
ক্রমিক নং |
উপকরণ |
পরিমাণ |
|
|
১ |
মাশরুম |
৫০ গ্রাম |
|
|
২ |
বাটার |
৫০ গ্রাম |
|
|
৩ |
পেঁয়াজ, লবণ |
পরিমাণ মত |
|
|
৪ |
পাউরুটি |
১টি |
|
|
|
|
|
|
রান্না প্রণালী
প্রথমে মাশরুমগুলো স্লাইস করে কেটে নিতে হবে। তারপর ফ্রাইপ্যানে
বাটার/কর্ন অয়েল বা ভেজিটেবল ঘির মধ্যে পেঁয়াজ, লবণ দিয়ে মাশরুমগুলো হালকা
করে ভেজে নিতে হবে ;
তারপর দুই পিস পাউরুটির ভিতর ভাজা মাশরুমগুলো সুন্দর করে স্প্রেড করে দিন। এরপর মিয়োনিজ, টমেটো, পেঁয়াজ দিয়ে পরিবেশন করতে হবে।
জ) মাশরুম ওমলেট
ডিম একটি প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার। ডিমের সাথে মাশরুম মিশালে সেই খাবারের
মান ও গুণ দু-ই বৃদ্ধি পায়। নীচে মাশরুম ওমলেট রান্নার উপকরণ দেওয়া হলো-
|
|
|
|
|
|
ক্রমিক নং |
উপকরণ |
পরিমাণ |
|
|
১ |
মাশরুম |
১০০ গ্রাম |
|
|
২ |
বাটার |
১৫ গ্রাম |
|
|
৩ |
ডিম |
২টি |
|
|
৪ |
দুধ |
১ থেকে ২ কাপ |
|
|
৫ |
লবণ ও মরিচ গুড়া |
পরিমাণ মত |
|
|
|
|
|
|
রান্না প্রণালী
• মাশরুম ধুয়ে পরিষ্কার করে কেটে নিতে হবে ;
• অল্প তাপে বাটার দিয়ে মাশরুমগুলো ৫ থেকে ৭ মিনিট ভেজে নিতে হবে ;
• ডিম ও দুধ একসঙ্গে ফেটে নিয়ে মাশরুমের কড়াইতে ঢেলে নিতে হবে ;
• প্রয়োজন মত লবণ ও মরিচের গুড়া দিয়ে ভাল করে নেড়ে নামিয়ে ফেলতে হবে।
• যাদের কোলস্টেরল সমস্যা আছে তারা ডিমের কুসুমটি বাদ দিয়ে সাদা অংশের সাথে
মাশরুম মিশিয়ে পুষ্টিকর উপাদেয় ওমলেট তৈরি করে খেতে পারেন।
মাশরুমের আচার
• রান্না ছাড়াও তাজা মাশরুম তেল ও মসলা দিয়ে আচার বানিয়ে রাখা যায়।
আচারের জন্য দুধ মাশরুম সবচেয়ে ভাল। এজন্য নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করতে হবে-
• তাজা মাশরুম পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে ;
• রসুন, আদা, গোল মরিচ ও সরষের গুড়া এবং গরম মসলা মিশিয়ে সামান্য তেলে মাশরুম ভেজে প্রায় শুকিয়ে ফেলতে হবে ;
• ঠান্ডা করে লবণ ও ভিনেগার মিশাতে হবে ;
• তেল গরম করে ঠান্ডা করতে হবে। সম্পূর্ণ মিশ্রণটি একটি বোতলে ভরে তেলের মধ্যে রাখতে হবে ;
• বোতলে ঢুকাবার আগে বোতলটি ভালোভাবে ঢাকনাসহ সিদ্ধ করে নিতে হবে।
• বাংলাদেশে খাদ্যে স্বয়ংভরতা অর্জন করেছে কিন্তু এথনো পুষ্টিতে সমৃদ্ধি
অর্জন করা সম্ভব হযনি। বাংলাদেশের পুষ্টিতে সহজ সরল এবং স্বল্প পুজিতে
পুষ্টির উপকরণ যোগান দিতে মাশরুম অনন্য। এখন প্রয়োজন উদবুদ্ধকরণের মাধ্যমে
মাশরুম উৎপাদন, বিপনণ, প্রক্রিয়াজাতকরণ, সংরক্ষণ এবং এর ব্যবহার সংশ্লিষ্ট
সকলের কার্যকর ভুমিকা। মাশরুম দিয়ে এদেশের পুষ্টি এবং কৃষিকে সমৃদ্ধ করার
সম্ভাবনা অনেক বেশি। মাশরুম সমৃদ্ধ পরিকল্পিত কৃষির প্রত্যাশা আমাদের সবার
কাম্য।