Pages

Sunday, June 1, 2014

মাশরুম কেন খাবেন ?

মাশরুম কেন খাবেন ?  


মাশরুম ক্লোরোফিলবিহীন ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদ এবং নতুন ধরণের সবজি যা সম্পূর্ণ হালাল,সুস্বাদু, পুষ্টিকর ও উচ্চ খাদ্যশক্তি এবং ভেষজগুণে ভরপুর।এর মধ্যে ২৫-৩০% প্রোটিন আছে যা অত্যন্ত উন্নত ও নির্ভেজাল। এতে উপকারী শর্করা, চর্বি আছে। যে কারণে মাশরুম বিভিন্ন জটিল রোগের প্রতিরোধক ও প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করে। মাশরুমের পুষ্টিগুণের পাশাপাশি যে সব ঔষধিগুণ পাওয়া যায় তা নিম্নরূপঃ
গর্ভবতী মা ও শিশুরোগ প্রতিরোধেঃ
মাশরুমে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন ও মিনারেলের এমন সমন্বয় আছে যা শরীরের “ইমিউন সিষ্টেমকে” উন্নত করে। নিয়োসিন ও অ্যাসকরবিক এসিড বা ভিটামিন সি’র প্রাচুর্য থাকায় মাশরুম স্কার্ভি, পেলেগ্রা প্রভৃতি শিশুরোগসহ গর্ভবতী মায়েদের রোগ প্রতিরোধে উপকারী।
বহুমুত্র প্রতিরোধেঃ
বহুমুত্র বা ডায়াবেটিস আক্রান্ত রোগীদের শর্করা ও ফ্যাট জাতীয় খাবার ক্ষতিকারক। ফ্যাট ও শর্করা কম এবং আঁশ বেশি থাকায় বহুমুত্র বা ডায়াবেটিস রোগীর জন্য মাশরুম বিশেষ উপকারী ও ডায়াবেটিস রোগীদের আদর্শ খাবার। নিয়মিত খেলে ব্লাড সুগার কমিয়ে আনা সম্ভব।
উচ্চ রক্তচাপ ও হৃদরোগ প্রতিরোধেঃ
মাশরুমে কোলেস্টরেল কমানোর অন্যতম উপাদান ইরিটাডেনিন, লোভাষ্টটিন, এনটাডেনিন, কিটিন এবং ভিটামিন বি,সি ও ডি থাকায় নিয়মিত মাশরুম খেলে উচ্চ রক্তচাপ (হাই ব্লাড প্রেসার) ও হৃদরোগ নিরাময় হয়।
চর্মরোগ প্রতিরোধেঃ
নানা ধরণের চর্মরোগ নিরাময়ে মাশরুম বিশেষভাবে উপকারী। ঝিনুক মাশরুমের নির্যাস থেকে খুশকি প্রতিরোধী ঔষধ তৈরী করা হয়।
দাঁত ও হাড় গঠনেঃ
মাশরুমের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম,ফসফরাস ও ভিটামিন-ডি আছে। শিশুদের দাঁত ও হাড় গঠনে এই উপাদানগুলো অত্যন্ত কার্যকরী।
ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধেঃ
মাশরুমের বেটা-ডি, ল্যামপট্রোল, টারপিনওয়েড ও বেনজোপাইরিন আছে যা ক্যান্সার ও টিউমার প্রতিরোধ করে। ফ্রান্সবাসীরা পর্যাপ্ত পরিমাণ মাশরুম খান বলে গত এক শতাব্দী ধরে ক্যান্সার রোগের প্রাদুর্ভাব কম বলে দাবী করা হয়। সম্প্রতি জাপানের জাতীয় ক্যান্সার ইনষ্টিটিউটের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, মাশরুমের ক্যান্সার প্রতিহত করার ক্ষমতা আছে।
এইডস প্রতিরোধকঃ
মাশরুমে ট্রাইটারপিন থাকতে বর্তমানে এটি বিশ্বে এইডস প্রতিরোধক হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে ।
আমাশয় রোগেঃ
মাশরুমে ইলুডিন এম ও এস থাকাতে আমাশয়ে উপকারী।
হাইপার টেনশনঃ
মাশরুমে স্ফিংগলিপিড এবং ভিটামিন-১২ বেশি থাকায় স্নায়ুতন্ত্র ও স্পাইনাল কর্ড সুস্থ্য রাখে। তাই মাশরুম খেলে হাইপার টেনশন দুর হয় এবং মেরুদন্ড দৃঢ় থাকে।
পেটের পীড়ায় বা সহজপাচ্য প্রোটিন যোগান দিতেঃ
মাশরুমে প্রচুর পরিমাণ প্রোটিন আছে। এই প্রোটিন সহজপাচ্য, সুস্বাদু ও মুখরোচক। মাশরুমে পর্যাপ্ত পরিমাণ এনজাইম বিশেষতঃ ট্রিপসিন এবং অগ্ন্যাশয় থেকে নির্গত জারকরস আছে বলে মাশরুম খাদ্য পরিপাক ও হজমে সাহায্য করে, রুচি বর্ধক এবং পেটের পীড়ায় নিরামায়ক।
কিডনির রোগ প্রতিরোধেঃ
মাশরুমে নিউক্লিক এসিড ও এন্টি এলার্জেন থাকায় এবং সোডিয়ামের পরিমাণ কম থাকায় কিডনি রোগ ও এলার্জি রোগের প্রতিরোধক।
চুল পড়া ও পাকা প্রতিরোধেঃ
মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে সালফার সরবরাহকারী এমাইনো এসিড থাকায় এটা নিয়মিত খেলে চুল পড়া ও পাকা প্রতিরোধ করে।
দৃষ্টিশক্তিঃ
মাশরুমের খনিজ লবণ চোখের দৃষ্টিশক্তি রক্ষার জন্যও সমাদৃত।
হেপাটাইটিস-বি ও জন্ডিসঃ
মাশরুমে প্রচুর পরিমাণে ফলিক এসিড ,লৌহ এবং লিংকজাই-৮ নামক এমাইনো এসিড থাকায় হেপাটাইটিস-বি ও জন্ডিসের প্রতিরোধক।
এনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতাঃ
শরীরে এনিমিয়া বা রক্তস্বল্পতা দেখা দিলে, নিয়মিত মাশরুম খেলে তা থেকে রেহাই পাওয়া যায়।
মাশরুমের খাদ্যগুণ (প্রতি ১০০ গ্রামে)
MSH
আপনার দৈনন্দিন খাদ্য তালিকায় রাখুন মাশরুম। মাশরুমের উপস্থিতি আপনার খাদ্যতালিকাকে করবে পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ ও আকর্ষনীয়।

লিখেছেনঃ বৈশাখী 



No comments:

Post a Comment