Pages

Friday, May 9, 2014

ভাগ্যবদল: ঝালকাঠিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাশরুম চাষ

ভাগ্যবদল: ঝালকাঠিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাশরুম চাষ

-কাজী খলিলুর রহমান ঝালকাঠি 


  ঝালকাঠিতে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মাশরুম চাষ। পরীামূলকভাবে ওয়েস্টার প্রজাতির মাশরুম চাষে ১০ কৃষাণী সফলতা অর্জন করেছেন। তিন মাস আগে কৃষি বিভাগ থেকে প্রশিণ এবং ৫০টি করে মাশরুমের স্পন নিয়ে তারা এর চাষ শুরু করেন। ইতোমধ্যে প্রতি কেজি দেড় শ’ টাকা দরে প্রত্যেকে মাসে গড়ে তিন-চার কেজি করে এ সবজি বিক্রি করেছেন। অধিক পরিমাণে ভেষজ গুণসম্পন্ন এ সবজি বিক্রিতে চাষিদের সহায়তা করছে কৃষি বিভাগ। 

কৃষি বিভাগ জানিয়েছে, দ্বিতীয় শস্য বহুমুখীকরণ প্রকল্পের আওতায় ঝালকাঠি সদর উপজেলার ১০ জন কৃষাণীকে মাশরুম চাষের ওপর প্রশিণ দিয়ে প্রত্যেককে ৫০টি করে মাশরুমের স্পন দেয়া হয়। এ সবজি ঘরের আনাচে কানাচে এবং পরিত্যক্ত জায়গায় চাষ করা যায় এবং এর চাষ প্রক্রিয়া অত্যন্ত সহজ, খরচও কম। ৫ ফুট দৈর্ঘ্যরে এবং ৪ ফুট উচ্চতার একটি সেল্ফ তৈরি করে তার মধ্যে চারটি তাক বানিয়ে ৫০টি স্পন চাষ করা যায়। ফলে এতে অধিক পরিমাণে জায়গা কিংবা আলাদা কোনো জমির প্রয়োজন হয় না। স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ এ সবজি চাষের জন্য উপযোগী। তাই মাশরুমের প্যাকেটে শীতে দুইবার, বর্ষার দিনে দু-তিনবার এবং গরমে চার-পাঁচবার স্প্রে করে ভেজা ভেজা ভাব রাখতে হবে। প্যাকেটের বাইরে ৭০ থেকে ৮০ ভাগ আর্দ্রতা রাখা দরকার। তাহলেই ছত্রাক জাতীয় উদ্ভিদটি সবজি আকার ধারণ করে উৎপাদন হতে থাকবে। ১০-১৫ দিন পর পর মাশরুম সংগ্রহ করা যায়। 
মাশরুম চাষি সদর উপজেলার গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের সাবেক সদস্য সাচিলাপুর গ্রামের মেরিনা বেগম, যোগেশ্বর গ্রামের পেয়ারা বেগম, চামটা গ্রামের মাহমুদা বেগম, কেওড়া ইউনিয়নের পিপলিতা গ্রামের মনোয়ারা বেগম, বিনয়কাঠি ইউনিয়নের মানপাশা গ্রামের কহিনুর বেগম জানান, কৃষি বিভাগের তত্ত্বাবধানে তারা মাশরুম চাষ করছেন। তারা ঢাকার সাভারে মাশরুম সেন্টারে গিয়ে এ চাষ পদ্ধতির বিষয়ে এক দিনের প্রশিণ নিয়েছেন। প্রশিণ শেষে তাদের ১০ জনের প্রত্যেকে ৫০টি করে মোট ৫০০টি মাশরুমের স্পন (প্যাকেট) দেয়া হয় কৃষি বিভাগ থেকে। তারা এই স্পন নিয়ে ঘরের বারান্দায় তাকে সাজিয়ে মাশরুম চাষ শুরু করেন। চাষের ১০ দিনের মধ্যেই মাশরুম হওয়া শুরু করে। ৫০টি স্পন থেকে মাসে গড়ে তিন-চার কেজি মাশরুম পাওয়া যায়। 
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ফিরোজ আহম্মেদ খান জানান, মাশরুম পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন পুষ্টিকর সবজি জাতীয় খাবার। মাশরুম চাষে কোনো আবাদি জমির দরকার হয় না এবং স্বল্প সময়ে ৭-১০ দিনের মধ্যে মাশরুম পাওয়া যায়। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা চিন্ময় রায় জানান, মাশরুমে প্রোটিন, ভিটামিন ও মিনারেল রয়েছে উঁচু মাত্রায়। এতে আমিষ, শর্করা, চর্বি, ভিটামিন ও মিনারেলের অপূর্ব সমন্বয় রয়েছে। ফলে দেহের ইম্যুন সিস্টেম উন্নত করে। এই প্রোটিনে মানবদেহের জন্য অত্যাবশ্যকীয় ৯টি এমাইনো এসিড প্রশংসনীয় মাত্রায় আছে।


No comments:

Post a Comment