Pages

Saturday, May 10, 2014

মাশরুম সমস্যা: ভালো নেই মাশরুম

ভালো নেই মাশরুম

-মোহাম্মদ মাহবুব আলম

মাশরুমকে খুব ভালোবেসে ছিলাম। কিন্তু মাশরুম সংশ্লিষ্ট অশিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত এবং প্রতিবন্ধী বেনিয়া ডক্টরদের টালবাহানায় আর নিদারুণ অবহেলায় মাশরুম যখন সাভারের রানা-প্লাজার মতো মুখ থুবড়ে পড়ল তখনই আমি এসব সরকারি কর্মকর্তাকে নিয়ে বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকায় ক্ষোভের কথা লিখেছিলাম। সেগুলো ছাপা হওয়ার পর ঢাকার সাভারে অবস্থিত জাতীয় মাশরুম প্রকল্পের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম। শোনা যাচ্ছে আমাদের মন্ত্রী মহোদয় আর মাশরুমের কার্যক্রম রাখতে উত্সাহী নন। মাত্র দুসপ্তাহের জন্য দেশে এসেছি। মাশরুম সংশ্লিষ্ট কয়েকজনের সঙ্গে কথা বলে আমার মনটা খুবই খারাপ হয়ে যায়। আমাদের মন্ত্রী মহোদয় নাকি আর কারো কথা রাখছেন না। রাখবেন কী করে! উনি তো অনেককেই চিনে ফেলেছেন। সরকারের বিভিন্ন স্তরে একাত্তরের কম্বল চোরদের বংশধরদের দাপট। কিন্তু তিনি নিকটঅতীতে একা সিদ্ধান্ত নিয়ে অনেক ভালো কিছু করেছেন। মাশরুমের এই রুগ্ন দশায় মন্ত্রী মহোদয়ের কাছে বিনীত অনুরোধ তিনি যেন এটিকে পুনরায় চাঙ্গা করার ব্যবস্থা করেন। যারা এর ক্ষতি করেছেন তাদের কাছ থেকে এটিকে নিরাপদ দূরত্বে রাখতে হবে। যে মাশরুমকে হরণ করেছে তাকে যেমন দূরে রাখতে হবে, তেমনি যে হরণ করতে দেখেছে তাকেও দূরে রাখতে হবেকেননা তিনি পরে সুযোগ পেলে করবেন। রাজনৈতিক পরিচয়ের দোহাই দিয়ে আর কোনো কীর্তিমান অফিসার মাঠ পর্যায়ের এই জাতীয় কর্মকাণ্ডটি যেন কলুষিত না করতে পারে সেটি বিবেচনায় রেখে এখানে সত্, অরাজনৈতিক অফিসার কাম্য। আমি মাশরুমকে থামিয়ে দেয়ার জন্য লিখিনি। আমাদের মাশরুম এখনও অবুঝ শিশু। অবুঝ মাশরুম-শিশু নিয়ে আমাদের মাশরুম চাষিরা বিপাকে পড়েছে। মাশরুম চাষিদের সিংহভাগই মহিলা। এইসব মহিলার মাশরুম চাষ থেমে গেছে প্রকল্প পরিচালকের ফালতু ধারণানির্ভর অলীক গবেষণার কারণে। অশ্রুবিজড়িত আমার লেখাগুলোতে আমাদের গরিব মাশরুম চাষিদের কান্নার জল আর্তনাদ মিশে আছে। এই কান্না মন্ত্রণালয়কে বিব্রত করার জন্য নয়। মাশরুমকে রক্ষা করার জন্য। ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র তার এক উপন্যাসের চরিত্রে বউ পেটানো এক পুরুষের জবানিতে লিখেছিলেন, ‘মারতে গেলে যে অমন করে বাধা দিস, এই জন্য না জানি আবার কবে মার খাস।মন্ত্রী-মহোদয় আমরা মাশরুম চাষিরা মাশরুমের ওপর এই আঘাত সইতে পারব না বলে এই আঘাতে বাধা দিচ্ছি। এখানকার উন্মাদ মাশরুম ডক্টরগণ নির্বিচারে ফাঞ্জিসাইড, পেস্টিসাইড ব্যবহার এবং মূল ল্যাবে কেমিক্যাল ফিউমিগেশন করে কোমল মাশরুমকে এমনিতেই নিতান্ত নাজুক করে ফেলেছে, বারো মাস চাষযোগ্য সাদা ওয়েস্টার মাশরুম তার উত্পাদন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছে। এরা ধান ভানতে শিবের গীত গেয়েও অনেক সময় নষ্ট করেছে। এহেন অবস্থায় রুগ্ন মাশরুম শিশুকে হত্যা না করে নিবিড় পরিচর্যার সুযোগ করে দিন। সবার আগে প্রয়োজন একে রাক্ষসের রাহুগ্রাস থেকে মুক্ত করা।
লেখক : মালয়েশিয়া প্রবাসী মাশরুম শিল্পোদ্যোক্তা
kagrofarm@gmail.com



No comments:

Post a Comment