কুমিল্লার ঘরে ঘরে মাশরুমের হাসি |
মহিউদ্দিন মোল্লা: মাশরুম
চাষে কুমিল্লার সহস্রাধিক পরিবারে সচ্ছলতা এসেছে। মাশরুম অর্থনৈতিক
সমৃদ্ধির পাশাপাশি পরিবারের পুষ্টির জোগান দিচ্ছে। জানা গেছে, ৩০০ টাকার
মাশরুম বীজ কিনে প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করা সম্ভব।
মাশরুম সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন উপকেন্দ্র কুমিল্লার সূত্র মতে, পাঁচ বছরে
কুমিল্লায় ১০ সহস্রাধিক ব্যক্তিকে মাশরুম চাষে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। তাদের
মধ্যে বাণিজ্যিকভাবে মাশরুম চাষ করছেন সহস্রাধিক ব্যক্তি।
বিশেষ
করে বুড়িচং, চান্দিনা ও চৌদ্দগ্রামের বিভিন্ন গ্রামে মাশরুমের আবাদ বেশ
সাড়া ফেলেছে। কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার খাড়াতাইয়া ও চান্দিনা উপজেলার
ছয়ঘরিয়া গ্রামে রয়েছে মাশরুমপল্লী। খাড়াতাইয়া গ্রামের জসিম উদ্দিন ও তার
স্ত্রী সাহেরা বেগম মাশরুম চাষ করছেন।
সাহেরা
জানান, তারা মাচা তৈরি ও বীজ ক্রয়ে ৪ হাজার টাকা খরচ করেছেন। এখন প্রতিদিন
১৬-১৭ কেজি মাশরুম বিক্রি করেন। প্রতি কেজি মাশরুমের পাইকারি মূল্য ১৩০
টাকা। সে হিসেবে প্রতিদিন তারা ২ হাজার টাকারও বেশি মাশরুম বিক্রি করেন।
মাস শেষে তাদের আয় ৬০ হাজার টাকার ওপর।
বুড়িচংয়ের
গাজীপুর গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ সদস্য নূর মিয়া ও তার স্ত্রী নারগিস
বেগম মাশরুমের চাষ করেন। তারা মাশরুম চাষ করছেন বাড়ির পরিত্যক্ত ঘরে।
নারগিস
জানান, মাশরুম চাষে সার ও ওষুধের প্রয়োজন হয় না। সকাল-বিকাল পানি দিলেই
হয়। নিজেরা খাওয়ার পাশাপাশি মাশরুম বিক্রি করে ভালো আয় হচ্ছে বলেও জানান
তিনি।
মাশরুম সম্প্রসারণ ও
উন্নয়ন উপকেন্দ্র কুমিল্লার উদ্যানতত্ত্ববিদ ড. মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন জানান,
মাশরুম একটি পুষ্টি ও ঔষধি গুণসম্পন্ন সবজি। মাশরুম ডায়াবেটিস, পেটের পীড়া
রোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে। মাশরুম চাষ করে লোকসানের কোনো আশঙ্কা নেই। কারণ
মাশরুম চাষে বেশি পুঁজির প্রয়োজন হয় না। উৎপাদিত মাশরুম স্থানীয় বাজারে
বিক্রি করা না গেলে মাশরুম সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন উপকেন্দ্র তা ক্রয় করে
থাকে। মাশরুম চাষে কুমিল্লার অনেক পরিবারে সমৃদ্ধি এসেছে। অল্প খরচে চাষ
করতে পারায় মাশরুম চাষ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন নারীরাও।
No comments:
Post a Comment